নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 134 বার পঠিত
স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ছিলেন আবদুল হামিদ। তিনি দীর্ঘদিন বঙ্গভবনের বাসিন্দা ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসাবে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সপরিবারে গিয়ে ওঠেন রাজধানীর অন্যতম অভিজাত এলাকা নিকুঞ্জের এক ডুপ্লেক্স বাড়িতে। তার ইচ্ছা মতো ঢেলে সাজানো হয় বাড়ির চারপাশ। ফুলবাগান, ওয়াকিং ওয়ে ছাড়াও নির্মাণ করা হয় পরিপাটি রাস্তা। পরিত্যক্ত নিকুঞ্জ খাল হয়ে ওঠে পদ্মফোটা দৃষ্টিনন্দন লেক।
রাজউকের তত্ত্ববাধানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। এতে ২৪ কোটি টাকারও বেশি অর্থ খরচ করা হয়।
নিকুঞ্জ-১ এলাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ছাড়াও আওয়ামী দোসর হিসাবে পরিচিত আরও অনেকের বাড়ি রয়েছে। হাসিনা সরকারের একাধিক এমপি-মন্ত্রীসহ দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক নেতা এবং হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট ব্যবসায়ীদের অনেকে একেকটি চোখ ধাঁধানো ডিজাইনের বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তাদের মধ্যে হামিদের বাড়ির পাশেই সাত নম্বর প্লটে বাড়ি করেছেন পলাতক সাবেক হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। চার নম্বর রোডের তিন নম্বর বাড়ির মালিক হাসিনার আত্মীয় মোহাম্মদ হোসেন সেরনিয়াবাদ।
এছাড়া শেখ হাসিনার সাবেক প্রেস সেক্রেটারি নাইমুল ইসলাম খান, সাংবাদিক নেতা ও হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা ‘ভাতের হোটেলখ্যাত’ ডিবি হারুনের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার হোসেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর ব্যাপারী, কোটিপতি ব্যবসায়ী এবং বেসরকরি বিমান সংস্থা নভোএয়ারের পরিচালক আরশাদ জামাল দিপু, শেয়ারবাজার লুটের অন্যতম হোতা সাবেক এমপি বাদল, শেখ জামাল স্পোর্টিং ক্লাবের অন্যতম পরিচালক বিতর্কিত ব্যবসায়ী ফিরোজ, উত্তরা এলাকার সাবেক এমপি হাবিব হাসান, জনশক্তি রপ্তানি খাতের মাফিয়া হিসাবে পরিচিত আদম ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবুল বাশার, শেখ পরিবারের প্রভাবশালী সদস্য এবং দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও বিমা খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী কবির হোসেন ওরফে শেখ কবির এবং সুইডেন আওয়ামী লীগের নেতা বিতর্কিত ব্যবসায়ী কাজী শাহ আলম ওরফে ফুল শাহ আলম নিকুঞ্জ এলাকায় বাড়ি করেছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর অন্য কোনো এলাকার সঙ্গে এর মিল নেই। অত্যাধুনিক পাশ্চাত্য নির্মাণশৈলীতে তৈরি সারি সারি ডুপ্লেক্স বাড়ি। প্রায় প্রতিটি বাড়ির সামনে বহুমূল্যবান মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ, ফেরারিসহ বিখ্যাত ব্র্যান্ডের গাড়ি পার্ক করা। এছাড়া অনেক বাড়ির সামনে বিদেশি কুকুরসহ অস্ত্রধারী নিরাপত্তা প্রহরী রয়েছে।
স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসাবে এখানে যারা প্রভাবশালী ছিলেন, তাদের বেশির ভাগই এখন পলাতক। বালাখানা নামে পরিচিত তাদের বাড়িগুলো এখন তালাবদ্ধ। ইতোমধ্যে অনেক বাড়ি ভাড়া দেওয়ার জন্য বাইরে টু-লেট নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি বাড়িতে নিরাপত্তা প্রহরী থাকলেও সতর্কতার অংশ হিসাবে রাতে আলো নিভিয়ে রাখা হয়। এমনকি নম্বর প্লেট খুলে কালো পর্দায় ঢেকে রাখা হচ্ছে তাদের ব্যবহৃত দামি গাড়িগুলো।
Posted ৭:১৪ এএম | বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।